ব্লগারের কথা

ব্যপারটা শুরু হয়েছিল গত এস্তেমা (২০১০) থেকে। আমার বোনরা একটা মাল্টিমিডিয়া ফোনসেট দিয়েছিল বয়ান রেকর্ড করে নিয়ে আসার জন্য। বয়ান রেকর্ড করার পরে আরেক বিপত্তি। বাসায় উর্দু বোঝে এমন লোক আমি একাই। লাইভ যে তরজমা হয়েছে তাতে নাকি অনেক কিছুই বাদ পড়েছে বলে আমার মায়ের বিশ্বাস। তাই হাত দিলাম বয়ান তরজমা করার জন্য। তরজমা করতে গিয়ে আমার সামনে খুলল এক নতুন জগৎ। দেখলাম বয়ান তরজমা করার জন্য অনেক বেশি মনোযোগ দিতে হয়। না হলে অনেক কিছু বাদ পরে। পুরোপুরি তরজমা করতে হলে একেকটা কথা কয়েকবার করে শুনতে হয়। না হলে বাদ পরে অনেক কিছু। দেখলাম প্রত্যেকটা লাইনেই উম্মতের জন্য থাকে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন। বয়ান শুনার সময় এত বেশি মনোযোগ আসলে দেয়া হয়ে উঠেনা। তাই অনেক কিছুই আসলে আমরা মিস করি।

শেষ পর্যন্ত যখন তরজমা করা হয়ে গেল দেখলাম আমার ফায়দাই হয়েছে সব থেকে বেশি। একেকটা কথা বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনতে হয়েছে, কয়েকবার শুনতে হয়েছে, আবার শোনার পরে লিখতে হয়েছে, লেখার পরে আবার সংশোধন করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত দেখলাম বয়ানটা মুখস্ত হয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হল আ্মালের মধ্যেও এর তাছির অনুভব করছি।

ফাযায়েলে আমাল একসময়ে আমাদের দাওয়াতী কাজের একমাত্র লিখিত গাইডলাইন ছিল। বলা চলে দাওয়াতের তাবলীগের সংবিধান। কোটি কোটি মানুষের হেদায়েতের উসিলা এই বইটি। আজ আমাদের আরও কিছু কিতাব আছে নেসাবের অংশ হিসেবে কিন্তু ফাযায়েলে আমালের গুরুত্ব কমেনি। আসলে কমা সম্ভবও নয়। যদিও কিছু কিছু অতি উৎসাহী পাবলিক মাঝে মাঝে কিছু আপত্তি করতে চায়। আল্লহ তায়া’লা তাদের হেদায়েত দিক। যে কিতাব কোটি মানুষের হেদায়েতের জরিয়া ঐ কিতাব নিয়ে প্রশ্ন তোলা গোমরাহীর রাস্তা বলেই আমার কাছে মনে হয়। বিশেষতঃ গত ৫ দিনের জোড় (২০০৯) থেকে মুন্তাখাব হাদিস বাধ্যতা মূলক ভাবে তালীম শুরু হবার পর থেকে এই সব পাবলিকের উৎসাহ আরও বেড়ে গেছে। কিন্তু আমিও ঐ মজলিসে ছিলাম যেখান থেকে বাংলাদেশে মুন্তাখাব বাধ্যতা মূলক হয়েছে। আমার মেধা ও স্মরণ শক্তি যদি আমার সাথে প্রতারণা না করে তাহলে আমি বলব ঐ মজলিসের কথা শুনে মোটেই আমার কাছে ফাযায়েলে আমালের গুরুত্ব খাটো বা ফাযায়েলে আমালের বিদায়ী ঘন্টা বলে মনে হয়নি। ওইখানে বলা হয়েছিল মোটামুটি এইরকম, “এস্তেমায়ী ভাবে প্রতিদিন ঘরে ও মাসজিদে ফাযায়েলের তা’লীম করা যাতে আল্লহ তায়া’লার ওয়াদাসমূহের উপর ইয়াকীন পাকা হয়ে যায় এবং দিল দুনিয়াবী আসবাব থেকে আমালমূখী হয়। নিজেদের ভিতরে ছয় নম্বরের সিফাত হাসিল করার জন্য মুন্তাখাব থেকেও তা’লীম করা। তাই একদিন ফাযায়েলে আমাল থেকে তা’লীম করা আরেক দিন মুন্তাখাব থেকে তা’লীম করা। একই ভাবে জামাতে ও মহল্লায়। এস্তেমায়ী তা’লীমের পাশাপাশি ইনফারাদী ভাবেও তা’লীম করা। কারণ এস্তেমায়ী ও ইনফারাদী তা’লীমের নূর ভিন্ন। যে কেউ যে তা’লীম বাদ দিবে সে ঐ তা’লীমের নূর থেকে বঞ্চিত হবে। ইনফারাদী তা’লীমে ফাযায়েল, মুন্তাখাবের পাশাপাশি হায়াতুস সাহাবাহ থেকেও তা’লীম করা

সে যাই হোক, যে যাই বলুক আমি মনে করি ফাযালেয়ে আমাল আল্লহ তায়া’লার কাছে এক কবুল কিতাব। আমি এই কিতাবের নির্দেশনাগুলোর উপর আমাল করার মাধ্যমে আল্লহ তায়া’লার কাছে কবুল হতে চাই। তাই অন্যান্য কিতাবগুলোর মত এটাও আমালের মধ্যে নিয়ে আসার উদ্দেশ্য লিখে ফেলার এরাদা করছি।

ব্লগ হল খাতা কলমের মত। আবার কাগজ/কলম কিনতে হয়না। রাখার জন্য বুকসেলফ কিনতে হয় না। 🙂 তাই স্রেফ নিজের ফায়দার জন্যই এই ব্লগ। অন্য আর কোন মহৎ উদ্দেশ্যও নেই, অসৎ উদ্দেশ্যও নেই। 🙂 পর্যায়ক্রমে হায়াতুস সাহাবা, মুন্তাখাব হাদিস এবং কিছু বয়ান লিখে ফেলার ইচ্ছা আছে।

ব্লগগুলো মাঝে মাঝে কেউ পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

http://maolanasaad.wordpress.com/

http://banglahayatussahabah.wordpress.com/

http://banglamuntakhab.wordpress.com/

https://fazayleamal.wordpress.com/

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান